পবিত্র মক্কা মদিনার দিনগুলি: (পর্ব ১১)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ মুজিবুল হক ০৫ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:১০:৩০ রাত
.....
"মসজিদুল আয়েশা"
পবিত্র মক্কার নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে এই মসজিদটি ওমরাহ মসজিদ ও তানিম মসজিদ নামেও পরিচিত তবে "উম্মুল মোমেনীন সজিদুল আয়েশা" নামেই বেশির ভাগ লোকে চিনে.
"মসজিদুল আয়েশা"
এ ধরনের আরো কয়েকটি মসজিদ আছে যেগুলির দূরত্ব সর্বনিম্ম ১৫ কিলোমিটার হতে সর্বোচ্চ ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত. আমরা মসজিদুল হারামে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে দ্রুত হোটেলে ফিরে আসি. রাতের খাবার শেষে কিছু সময় পর রাত সাড়ে ১০টায় গোসল করে এহরাম পরিধান করে আমার মা সহ তৈরি হয়ে যাই. রাত ঠিক ১১টায় আমাদের কাফেলা প্রধান জনাব মোহাম্মদ আলী আনসারী সাহেব বিশাল এক বাস যোগে প্রায় ৫০জন হাজী নিয়ে মসজিদুল আয়েশার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন
(বাকী হাজীরা অনুপস্হিত ছিলেন) মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে আমরা মসজিদুল আয়েশায় পৌঁছে গেলাম. বিশাল এলাকা জুড়ে বাগান ঘেরা মসজিদ কমপ্লেক্স.
"মসজিদুল আয়েশা"
অনেক হজ্বযাত্রী বাহী বাস দেখা গেল যার মধ্যে কমলা রঙের সৌদি আরব পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানীর (SAPTCO) বাসই বেশী.
সাফটকো সিটি বাস
এই বাস গুলি পবিত্র মসজিদুল হারামের পাশের স্টেশন থেকে ছেড়ে মসজিদুল আয়েশা এসে আবার মসজিদুল হারামের পাশের স্টেশনে চলে যায় মার্সিডিজ বেন্জ নির্মিত মার্কো পলো সিরিজের এই বাসগুলি অত্যন্ত আরামদায়ক ভাড়া মাত্র ২ রিয়াল তবে সিটি কেন্দ্রীক এই বাসের রুট পুরো মক্কা শহরে বিস্তৃত.
সাফটকো সিটি বাস
আর একই নামে আন্তনগর বাসও আছে তবে ঐ বাস গুলি আরো আধূনিক ও ভিন্ন রঙের. আমরা বাস থেকে নেমে সোজা মসজিদে প্রবেশ করি.
"মসজিদুল আয়েশা"
পুরুষ ও নারীদের আলাদা ব্যবস্হা আছে. প্রথমে এহরামের নামাজ পড়ে ওমরাহ'র নিয়ত ও দোয়া পড়ে "লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক" দোয়া সহকারে বাসে উঠে পড়ি. আমি আজ আমার মরহুম বড় ভাইয়ের জন্য ওমরাহ'র নিয়ত করেছি. এই মসজিদটি দেখতে খুবই সুন্দর. রাতদিন ২৪ ঘন্টা এখানে মুসল্লীর উপস্হিতি থাকে দূর থেকে এখানে এসে যারা এহরাম পরিধান করবেন তাদের জন্য গোসলের সুবিধার্থে অনেক গোসলখানার ব্যবস্হা আছে. অনেক দূর হতে এই মসজিদের মিনার নজরে আসে.
আমাদের গাড়ী চলতে শুরু করেছে এবং দ্রুততম সময়েই পবিত্র মসজিদুল হারামের সামনে স্টেশনে নেমে আমরা বাব মালিক আবদুল আজিজ দিয়ে পবিত্র মসজিদুল হারামে প্রবেশ করলাম .
মসজিদে আয়েশা হতে মসজিদুল হারামে যাবার নির্দেশনাবলী
অতপর দুই রাকাত নামাজ পড়া শেষে পবিত্র হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করে তাওয়াফ আরম্ভ করলাম. অতি অল্প সময়ে তাওয়াফ সম্পন্ন করে মাকামে ইব্রাহীমের সামনে নামাজ আদায় করে পবিত্র জমজমের পানি পান করে পবিত্র সাফা পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হই."ইন্নাস সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিনশা ইরিল্লাহ ফামান হাজ্জাল বায়তা" এই দোয়াটি পাঠ করা অবস্থায় পবিত্র সাফা পাহাড়ে উঠতে হয়.
পবিত্র সাফা ও মারওয়া সাঁই শুরু করি অতপর সাতবার সাঁই শেষে পবিত্র মারওয়ায় নফল নামাজ ও মুনাজাত করে বেরিয়ে আসি. আমার মাকে "বাব মালিক আবদুল আজিজের" সামনে বসিয়ে রেখে আমি জমজম টাওয়ারের নীচতলায় একটি মিশরীয় সেলুনে মাথা মুন্ডন করে আসি...
.... আজ মুন্ডন করতে নিল ৫ রিয়াল. কথায় কথায় সেলুন মালিকের সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গেল. সে এবং তার দুই ভাই এই সেলুন চালায় তার নাম ছিল মোহাম্মদ তবে আমি তাকে মুরসী নামেই সম্বোধন করতাম সে খুশী হতো. এরপর থেকে তার কাছেই মাথা মুন্ডন করি .
[b]সেলুনে মাথা মুণ্ডন করছি[/b
আসার সময় ক্যাফটেরিয়া থেকে সওরমা ও জুস নিয়ে আসি এগুলি খেয়ে আমরা রাত প্রায় ২টায় হোটেলে রওয়ানা হই আর এভাবেই সম্পন্ন হয় আমাদের প্রথম দিনের ওমরাহ'র সফল কার্যক্রম আগামীকাল আমার বাবার ওমরাহ পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করে ঘুমিয়ে পড়ি.....
বিষয়: বিবিধ
২৩৪০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
মসজিদে আয়শার বিষয়ে আরেকটু বিস্তারিত লিখলে ভাল হতো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন